এই তেলাকুঁচো পাতা ও ফল ঐতিহ্যবাহী ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ফল ও পাতার রস জ্বর, এজমা, ব্রঙ্কাইটিস, জন্ডিস, কুষ্ট রোগ নিরাময় ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি খাবার হিসেবেও ব্যবহার করা হয়ে থাকে। থাইল্যান্ডে বিভিন্ন তরকারি ও স্যুপে এর ফল ব্যবহার করা হয়। এই ফল অত্যন্ত পুষ্টি গুণ সমৃদ্ধ। বিশেষ করে এতে ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে। প্রতি ১০০ গ্রাম তেলাকুঁচোয় ১.৪ মিলি গ্রাম পরিমাণ আয়রন, ০.০৮ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-২ (রিবোফ্লাবিন), ০.০৭ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-১ (থায়ামিন), ৪০ মিলিগ্রাম ক্যালশিয়াম ও ১.৬ গ্রাম আঁশ সহ প্রচুর পরিমাণে বিটা-ক্যারোটিন রয়েছে। এই ফলে রয়েছে 'মাস্ট সেল স্টেবিলাইজিং', 'এনাফাইলেকটিক রোধী' এবং এন্টি হিস্টামিন জাতীয় উপাদান।
Foto di naturepost da Pixabay
এবার চলুন দেখে নেওয়া যাক, কি কি রোগে আমরা এটাকে কিভাবে ব্যবহার করতে পারি -
তেলাকুঁচোর পাতায় অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকায় আমাদের স্নায়ুবিক দুর্বলতা দূর করে। তেলাকুচোর পাতায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণ থায়ামিন থাকে যা আমাদের পরিপাকে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে সাহায্য করে। এবং আমাদের পরিপাকতন্ত্র ভালো রাখে।
- ডায়াবেটিস রোগের ক্ষেত্রে তেলাকুঁচোর পাতা কান্ড সহ ছেঁচে রস বের করে প্রতিদিন সকালে ও বিকালে আধাকাপ করে খেতে হবে। এর পাতা রান্না ও ভাজি করে খেলেও ডায়াবেটিস এর ক্ষেত্রে উপকার পাওয়া যায়।
- জন্ডিস রোগের ক্ষেত্রে তেলাকুঁচোর শিকড় বা মূল ছেঁচে রস করে প্রতিদিন সকালে আধা কাপ পরিমাণ খেতে হবে।
- সাধারণত সর্দী ও কাশি বসে যাওয়ার ফলে শ্বাসকষ্ট হয়, এর থেকে মুক্তি পেতে তেলাকুঁচোর মূল ও পাতার রস হালকা গরম করে প্রতিদিন সকাল বিকাল ৩-৪ চা চামচ করে প্রতিদিন খেতে হবে।
- শ্লেষ্মা কাশি উপশম করতে তেলাকুঁচোর মূল ও পাতার রস হালকা গরম করে তাতে আধা চা চামচ করে মধু মিশিয়ে ১ সপ্তাহ সকাল ও বিকালে খেতে হবে।
- শ্লেষ্মা-জ্বর এর ক্ষেত্রে ৩-৪ চা চামচ পরিমাণ এর পাতা ও মূলের রস হালকা গরম করে প্রতিদিন সকাল ও বিকালে খেতে হবে। এর জন্য তেলাকুঁচোর পাতার পাটায় বেটে রস করতে হবে।
- গাড়িতে ভ্রমণ করার সময় বা অনেক সময় পা ঝুলিয়ে বসে থাকলে পা ফুলে যায়, যাকে শোথ রোগ বলা হয়ে থাকে। এর থেকে মুক্তি পেতে প্রতিদিন সকাল ও বিকালে তেলাকুঁচোর মূল ও পাতার রস ছেঁচে ৩-৪ চা চামচ পরিমাণ রস করে খেতে হবে।
- নারীদের ক্ষেত্রে সন্তান প্রসব করার পর অনেকের শরীর ফ্যাকাশে হয়ে যায় এবং স্তনে দুধ আসে না। এরকম সমস্যায় পড়লে সবুজ তেলাকুঁচো ফলের রস ছেঁকে একটু গরম করে তার রস বের করে তার সাথে ২-৫ ফোঁটা মধু মিশিয়ে সকাল বিকাল দুইবার খেলে ৪-৫ দিন এর মধ্যেই স্তনে দুধ আসবে।
- আমাশয় হলে তেলাকুঁচোর মূল ও পাতার রস প্রতিদিন সকালে ও বিকালে ৩-৪ চা চামচ করে খেতে হবে।
- খাবারে মুখে অরুচি হলে তেলাকুঁচোর পাতা একটু সিদ্ধ করে পানি ফেলে দিয়ে ঘি দিয়ে শাকের মত করে রান্না করতে হবে। তারপর খেতে বসে প্রথমেই সেই শাক খেতে হবে। এতে মুখে রুচি আসবে।
- ব্রণ ও ফোঁড়ার ক্ষেত্রে এর রস বা পাতা ছেঁচে ফোড়া ও ব্রণে প্রতিদিন সকালে ও বিকালে ব্যবহার করতে হবে।




0 Comments